ঢাকা , রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ , ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বদরগঞ্জে নিহত বিএনপি নেতার পরিচয় গোপন, তৃনমুল ক্ষোভ।


আপডেট সময় : ২০২৫-০৪-১২ ১৫:৩৫:২৯
বদরগঞ্জে নিহত বিএনপি নেতার পরিচয় গোপন, তৃনমুল ক্ষোভ। বদরগঞ্জে নিহত বিএনপি নেতার পরিচয় গোপন, তৃনমুল ক্ষোভ।
 
 
রানা ইসলাম বদরগঞ্জ রংপুর 
 
‎রংপুরের বদরগঞ্জে দোকান-সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী লাভলু সরকার নিহত হন। এ ঘটনায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার অভিযোগে আট নেতাকে বহিষ্কার ও তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে বিএনপি।

তবে মামলার এজাহারে নিহত লাভলুকে ‘জনৈক একজন ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, তার পরিবার ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। গত বুধবার রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলি আদালতে বিএনপির জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম রংপুর ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফি কামাল বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
 
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ‘আসামিরা নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কলহে জড়ায়। এতে দলের মানহানি ঘটে এবং স্থানীয় এক জনৈক লাভলু মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
 
দলের নতুন কমিটি এখনো গঠন হয়নি। এ কারণে হয়তো তার নাম সরাসরি মামলায় উল্লেখ করা হয়নি তবে লাভলুর লাভলুর পরিবার এবং স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন, লাভলু একজন সক্রিয় ও নিবেদিত বিএনপি কর্মী ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক মামলায় একাধিকবার জেলও খেটেছেন। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৭ দিন কারাবন্দি ছিলেন।
 
‎দলীয় সূত্র জানায়, লাভলু সরকার মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন এবং চলতি বছরের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন।
 
মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, ‘লাভলু সরকার একজন ত্যাগী নেতা ছিলেন। তাকে দলীয় পরিচয় থেকে বঞ্চিত করা অত্যন্ত দুঃখজনক।
 
‎লাভলুর স্ত্রীর ভাই রিপন মিয়া বলেন, ‘তিনি ফেসবুকে সারাক্ষণ তারেক রহমান ও বিএনপির পোস্ট শেয়ার করতেন। রাজনীতির জন্য বারবার জেল খেটেছেন, অথচ মৃত্যুর পর দলের স্বীকৃতি পেলেন না-এটা আমাদের পরিবারের জন্য অপমানজনক।
 
বিষয়টি জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী বলেন, ‘লাভলু সম্ভবত ইউনিয়ন কমিটির সমাজসেবা সম্পাদক ছিলেন, তবে মামলার আরজি আমি দেখিনি।
 
আনিছুর রহমান লাকু বলেন, ‘দলের আগের কমিটিগুলো ভেঙে গেছে, নতুন কমিটি এখনো গঠন হয়নি। এ কারণে হয়তো তার নাম সরাসরি মামলায় উল্লেখ হয়নি।
 
সংঘর্ষ ও বহিষ্কার প্রসঙ্গ গত ৫ এপ্রিল বদরগঞ্জ পৌর এলাকায় একটি দোকান সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল হক মানিকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে লাভলু নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হন। ঘটনার পরদিন জেলা বিএনপি তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় এবং আরও পাঁচজনসহ মোট আটজনকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এর পর দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে এই আটজনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়।
 
মামলার আসামি মানহানির মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন
‎রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার, বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল হক মানিক, পৌর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক কয়েল, উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, কালুপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক এবং বিষ্ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া। এ ছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাত আরও দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
 
এবিষয়ে নিহত লাভলু মিয়া হত্যার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক বিদ্যুৎ কুমার মজুমদার বলেন, এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত আছে। 
 
এ ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় দুটি মামলা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আতিকুর রহমান বলেন, ‘মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’




 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ